বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
The Daily Post

পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানিশুন্য কুষ্টিয়ার গড়াই নদী 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানিশুন্য কুষ্টিয়ার গড়াই নদী 

কুষ্টিয়ার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত অপরূপ প্রমত্ত গড়াই নদী আজ মৃতপ্রায়। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিনত হয়েছে ছোট খালে। সেই সঙ্গে নেমে গেছে পানির স্তর। এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকসহ এর আসে পাশের প্রায় লক্ষাধিক নলকূপে উঠছে না পানি। 

এমনকি পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীর এমন করুন পরিনতির কারণে এখানকার মানুষের পাশাপাশি জীব-বৈচিত্র পড়েছে হুমকীর মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বলছে প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই।  তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার দেয়া তথ্যে পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকূপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের উপরে নলকূপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে এসব এলাকার প্রায় সব নলকূপই হয়ে গেছে অকেজো। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়নসহ আরো অনেক এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। 

তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাসকারীদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। পানির সংকট এতটাই প্রকট যে খাবার পানির পাশাপাশি গোসল, এবং গবাদি পশুর জন্য পানির ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে। পানির জন্য নদীর চরের প্রায় দেড় দুই কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে তাদের। এমন সংকটে এর আগে কখনো পরেন নি তারা। 

গড়াই নদীর উপর অবস্থিত সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতু এবং গড়াই ব্রিজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানিপ্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধুধু বালির উপর রয়েছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে। পানিশূন্য এ নদী শুধুই  এখন স্মৃতি। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবেই এ নদীর করুন দশা বলে অনেকেই মন্তব্য করছে। 

কুষ্টিয়া পৌর কতৃপক্ষ বলছে, নদীগুলোর নাব্যতা না থাকার পাশাপাশি পানির স্তর বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ ফিট নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে উঠছে না পানি। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পরেছে জনজীবন। এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা করা আছে তার উৎপাদনও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

আর পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র গভীর নলকূপ ব্যবহারকে দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তারা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে নদীর পানিওয়াদি শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে যেসব নলকূপের লেয়ারকম দেয়া সেসব নলকূপে পানি না ওঠারই কথা। সেক্ষেত্রে নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরো গভিরে লেয়ার দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

উৎসগুলো থেকে আসা পানি নদীতে সংরক্ষণ করা গেলে অনাবৃষ্টি বা শুস্ক মৌসুমে যেমন মিটবে পানির চাহিদা অন্যদিকে বাড়বে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আর এভাবেই সম্ভব এই সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসার, এমনটাই দাবি ভুক্তভুগী সকলের। 

টিএইচ